বৃহস্পতিবার, ০১ Jun ২০২৩, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল ইউপির শ্রীপুর গ্রামের দক্ষিণ পূর্ব পাড়ার মুতি ভুইয়া (৬৫) এক বৃদ্ধ পুর্ব-বিরোধের জেরধরে দুৃর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। হামলায় গুরুতর আহত হন মুতি ভুইয়া । রক্তাক্ত ,আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত মুতি ভুইয়ার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান । ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে গতকাল সন্ধ্যায় নিহতের লাশ শ্রীপুর এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর আনুমানিক প্রায় ২ টার দিকে নিহত মুতি ভুইয়া নিজ বাড়ির ঘরের দরজার সামনে আঙ্গিনায় এ হামলার শিকার হন ।
এ ঘটনায় স্থানীয় লোকমুখে শোনা যায় যে, জায়গা-জমি নিয়ে পুর্ব-বিরোধের জেরধরে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনা ঘটে । কিন্তু প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্বজনরা – নিহত মুতি ভুইয়ার উপর চালিয়ে থাকতে পারে বলেও সন্ধেহ প্রকাশ করেন ।
অন্যদিকে কে বা/ কারা এই হামলা চালিয়েছেন বৃদ্ধা মুতিউর ভুইয়ার উপর তা স্থানীয় আশেপাশের কেহ সরজমিনে দেখতে পাননি।
তবে নিহতের স্ত্রী রেশমা বেগম বলেন কিছু দিন পূর্বে রাতের বেলায় টর্চের আলো চোখে পড়াকে কেন্দ্র করে শত্রæতা সৃষ্টি হয় ও মারামারির মত ঘটনা ও ঘটে ।
নিহতের ছেলে রুবেল মিয়া জানান জয়গা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে উভয় পক্ষের মধ্যে এ নিয়ে মামলা আছে বিজ্ঞ আদালতে । গত বুধবার ২৩ সেপ্টেম্বর আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে মামলার হাজিরা শেষে বাড়িতে আসা মাত্রই প্রতিপক্ষের মোঃ জাহের , রিফাত, আল আমিন, হোসেন ,খাইরুল, শেরালি, রাধান, রহিম ,লাদেন, আক্তার ,সুমন মেম্বার- সহ আরো অনেকে তার বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র ( দা – জাডি ) নিয়ে হামলা করেন এবং দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে মুতি ভুইয়ার মাথায় সজোরে আঘাত করলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন । পরে তাকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হসপিটালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। স্বজনরা ঢাকা থেকে ফিরেয়ে আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হসপিটালে তাকে ভর্তি করেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ২৫ শে সেপ্টেম্বর রাত বার টায় তিনি মারা যান. এবং পোষ্টমর্টেম শেষে লাশ ,এশার নামাজ বাদ জানাযা করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয় ।
অন্যদিকে বিবাদীপক্ষের রহিম মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তার মোটোফোনে সাংবাদিকদের জানান নিহতের ছেলে রুবেল মাদকসেবি ,মাতাল অবস্থায় সে মারামারি করে ,তাই মামলা হয় ও প্রমানিত হয়ে জেল খাটে এখন জামিনে মুক্ত ।
রুবেল তার বাবা ( মুতি ভুইয়াকে) খুন করে আমাদেরকে ফাসিয়ে দেবে বলে প্রতিনিয়তই আমাদের হুমকী দিত। তাই রুবেলের বিরুদ্ধে ১ মাস পূর্বে বিজয়নগর থানায় রুবেল, রকিব, তাদের মা রেশমা বেগম, সহ আরও কয়েক জনের নামে জিডি করেন যা চম্পকনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
প্রতিপক্ষের লিপি আক্তার আরো দাবী করে বলেন, রুবেলই তার বাবা মুতি ভুইয়ার উপর হামলা করেছেন। তার মৃত্যুর পর আমাদের বাড়ি লুটপাট করে তাহারা, রুবেল, তার মা ও ভাইদের আলাদা আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার আসল রহস্য ও প্রকৃত খুনী ধরা পড়বে।
সাংবাদিকের প্রশ্নে, রহিম মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তার দাবীর স্বপক্ষে কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি ।
বিজয়নগর থানার চম্পকনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, রহিম মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তার দাবী ভিত্তিহীন, আমার কাছে কোন জিডির তদন্তের দায়িত্ব আসেনি । লুটপাটের বিষয়ে – তিনি জানান, অসত্য ও সাজানো নাটক মাত্র।
নিহতের নিকট আত্বীয় শ্রীপুর গ্রামের কৃতী সন্তান, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আবুল খায়ের সাংবাদিকদের জানান, খুনী যেই হউক, তার বিচার আমরা চাই। ঘটনাটি নিরপক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত খুনীদের বিচারের আওতায় আনা হউক । এবং কারা মুতি ভুইয়ার উপর হামলা করেছেন এটা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুনীদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে আমি জোরদাবী জানাই।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে স্থানীয় সিংগারবিল ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ভুইয়ার (০১৭১৪-৩৫৪৬১৭) সাথে তাঁর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আতিকুর রহমান জানান, বাড়ি যাওয়ার রাস্তা নিয়ে উভয়ে পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় এবং এ বিষয়ে মামলা এজহার ভুক্ত হয়ে মামলা কোর্টে বিচারাধীন , নিহতের ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মোঃ কবির বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন এবং ৩ জনকে আটক করা হয়. বাকি আসামি গুলো ধরার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে ।