বৃহস্পতিবার, ০১ Jun ২০২৩, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড় পুর ইউনিয়নের খাটিঙ্গা গ্রামের আলমগীর সর্ব প্রথম এই উপজেলায় সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ড্রাগন ফলের চাষাবাদ শুরু করেন। মাত্র এক বছরে তিনি তার ড্রাগন চাষাবাদে সফলতা লাভ করেন।
স্থানীয়দের কাছে আলমগীর এখন ড্রাগন ফল চাষী হিসেবে পরিচিত ।
চাষী আলমগীর জানান ,আমি প্রবাস ফেরত ,বাপ দাদার ঐতিহ্য ধান চাষ করা , আমি তাতে আগ্রহী নই , তাই একদিন কথা হয় কৃষি মাট উপ সহকারী কর্মকর্তার সাথে । তিনি আমাকে ড্রাগন চাষের বিষয়ে উদ্ভোদ্ধ করেন । তাই আমি তাহার পরামর্শক্রমে ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের আবাদ শুরু করি , তার দিয়ে বেড়া ,সিমেন্টের খুটি বানানো , গেইট করা ,নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ এ পর্যন্ত ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে , কিন্তু চাড়া লাগানোর ১ বছরের মধ্যে ফল বিক্রি করতে পারব তা আগে ভাবিনি। বাগানে শুধু মাত্র পিংক জাতের বা বারি ১ জাতের ড্রাগনের চারা রোপন করা হয়েছে। প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে ফল বিক্রিতে আমি এ পর্যন্ত ১ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করেছি । আমি অত্যন্ত খুশি ,আশাকরি সামনে আরো বেশী জায়গায় এর আবাদ করব । বাগানের বয়স প্রায় এক বছর হয়। আট মাসে ফুল এবং ৪৫ দিনে হতে ফল বিক্রি শুরু করেছে। প্রথম বছরে ফলও আসে বেশ। ফল দেখতে ও কিনতে ভিড় জমান এলাকাসহ দূর-দূরান্তের লোকজন।
ড্রাগনের গাছ সোজা রাখার জন্য জমিতে পিলার স্থাপন করা হয়। জমিতে নির্দিষ্ট পরিমান দুরত্ব বজায় রেখে জমিজুড়ে পিলার স্থাপন করে প্রত্যেক পিলারের মাথায় একটি করে পরিত্যাক্ত ইজিবাইকের ট্রায়ার বেধে দেয়া হয় । পিলারেরপাশে ড্রাগন চারা রোপন করা হয়
বাগানটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, ক্যাকটাস গাছের মতো দেখতে ড্রাগনের গাছগুলো বেড়ে ইতিমধ্যে সিমেন্টের খুটির মাথায় ছুঁই ছুঁই করছে। ড্রাগন চাাষের জন্য আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে ইতিমধ্যে ড্রাগনের চারা গুলো বেশ পরিপক্কও হয়ে উঠেছে ।
কৃষি উপসহকারী মাঠ কর্মকর্তা মো; আশরাফুল আলম বলেন এই এলাকার মাটি এবং আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য বেশ উপযোগি। আমরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পক্ষ থেকে সর্বদা বাগানটি পরিদর্শন করে চাষিকে উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি অফিসার খিজির হোসেন প্রামানিক বলেন , কৃষকদের উদ্ভোদ্ধ করণ থেকে শুরু করে যাবতীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট ও চারা, সার ,কীটনাশক, কিছু দিয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করে থাকি , ড্রাগনের ৪টি জাত রয়েছে , যেমন – হলুদ , সাদা ,গোলাপী , ও পিংক । বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট হতে উদ্ভাবিত বারী ১- যা পিংক হিসেবে পরিচিত । এ পিংক জাতের ড্রাগন ফল দেখিতে সুন্দর খেতেও সুস্বাদু । একবার গাছের চাড়া লাগালে বছরে ৮ মাস ফল হার্বেষ্ট করা যায় । একটি গাছ থেকে ১ মণ ফল আহরণ সম্ভব । এবং ২০ বছর যাবত ফল আহরণ করা যায় । শীতকালে প্রচন্ড শীতে ফল উৎপাদনে ব্যহত হতে পারে তাই গাছের উপর লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা দরকার ।
এই সাফল্য এলাকার অন্যসব কৃষকদেরও অনুপ্রাণিত করবে ।স্ববলম্বি হওয়ার পাশাপাশি নিজ উপজেলায় ড্রাগন চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে অন্যন্য অবদান রাখার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক আলমগীর।