শনিবার, ২৭ মে ২০২৩, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর দুরবস্থার চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ উপজেলায় ১০ টি ইউনিয়নে মোট ১০০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন মুঠোফোনে জানান গত বিগত বছরে করোনা মহামারী হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সরকার ১৭ ই মার্চ ২০২০ ইং থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন, কিন্তু ২০২১ ইং এর পহেলা জানুয়ারিতে নতুন বই বিতরণ নতুন ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সকল শিক্ষকের উপস্থিতি সহ অফিস খোলা রাখা ও ছাত্র-ছাত্রীর উপবৃত্তি সহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
সরেজমিনে পাইকপাড়া পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল পরিদর্শনে গেলে সেখানে স্কুল তালা বন্ধ অবস্থায় থাকে দেখা যায়, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বর্তমান মেম্বার আবুল কাশেম ও বর্তমান হরষপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সারওয়ার রহমান ভূঁইয়া উভয়ে সরোজমিনে উপস্থিত থেকে পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন, এলাকার ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক বৃন্দ বলেন করোনাকালীন সময় থেকে এ পর্যন্ত বন্ধ আছে, শুধুমাত্র বই বিতরণের জন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন এরপর আবারো বন্ধ,
হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উপস্থিত হয়ে দেখা যায় অফিস সব বন্ধ কিন্তু জাতীয় পতাকা উড়ছে,বেলা ১২.৩০ মিনিটে কিন্তু বাহিরে জাতীয় পতাকা পতপত করে উড়তে থাকেতে দেখা যায়,
স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা ফাহিনুর আক্তার( গর্ভাবস্থা) বেলা ১ টায় তার বাবা সহ( হাজিপুর মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) স্কুলে এসে উপস্থিত হন,এ সময় প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম কে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি, স্কুল সংলগ্ন বাড়ির সহকারি শিক্ষিকা শিপ্রা রানী বণিক কে ফোন করলে তিনি ঘুমিয়ে আছেন বলে তাহার ছেলে জানান, নাইট কাম প্রহরী, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ও স্কুলে উপস্থিত নেই। এ বিষয়ে দাতা সদস্য জুটন বনিক স্কুলের এমন দুরবস্থা দেখে অনেক দুঃখ প্রকাশ করেন।
জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেলা ৩ টা অফিস বন্ধ পতাকা উড়ছে না, স্কুল মাঠে ট্রাক্টর গাড়ির ছড়াছড়ি প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান মুঠোফোনে জানান স্কুল খোলা রাখার জন্য উপর মহলের নির্দেশ রয়েছে, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ভোট দানে ব্যস্ত থাকায় যেতে পারেনি, এ বিষয়ে স্কুল সংলগ্ন ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লিয়াকত আলী খান জানান করোনা কালীন সময় থেকে এ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ শুধুমাত্র বই বিতরণের সময় দু’একদিন স্কুল খোলা রেখেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন কে অবগত করলে তিনি দেখবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক অভিভাবক আক্ষেপ/অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের শিক্ষক/শিক্ষিকারা সিম কার্ড বিক্রি করেন, স্কুল তালা বন্ধ কিন্তু জাতীয় পতাকা উড়ছে, এটা জাতীয় পতাকার প্রতি সরকারি বিধি বিধান লংঘন ও অমর্যাদা প্রদর্শন মাত্র। বরাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যথাযথ বিহিত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, জনগণ , অভিভাবক ও সুশীল সমাজ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ) কেএম ইয়াসির আরাফাত বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত পাঠদান দান বন্ধ কিন্তু অফিস খুলে রাখতে হবে, সরকারের নির্দেশ অবশ্যই সবাইকে মানতে হবে এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।