জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে চরম অনিয়ম, ঘর পেলেন বিত্তশালী ইয়াছিন ভূঁইয়া

স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী ভূঁইয়ার ছেলে ইয়াছিন ভূঁইয়া (জমি আছে ঘর নেই) প্রকল্পে ২০১৮ সালে বরাদ্দকৃত প্রকল্প থেকে বিত্তশালী হয়েও ইয়াছিন ভূঁইয়া মাছিহাতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমিনের স্বজন প্রীতিতে অসহায় গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত, জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের ঘর ইয়াছিন ভূঁইয়া সাবেক চেয়ারম্যানের ফুফাতো ভাই হওয়ার সুবাদে আল-আমিনের সহযোগিতায় সরকারি এই ঘর বাগিয়ে নেয় অঘাত সম্পত্তির মালিক আটলা গ্রামের ইয়াসিন ভূঁইয়া।

ইউনিয়নের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বহুদিন ধরে আলোচনা, সমালোচনা ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৫ ই আগস্টে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ার পর থেকেই সাধারণ জনগণের মাঝে এ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। মাছিহাতা ইউনিয়নে অনেক হতদরিদ্র পরিবার রয়েছে যাদের জায়গা থাকলেও বসবাস করার উপযোগী ঘর নেই।

সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমিনের স্বজন প্রীতিতেই অনেকেই
সরকারি এই প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়েছে যা সম্পূর্ণই চরম অনিয়ম ও অনৈতিক।

গ্রামবাসী সাংবাদিকদের কে আরও বলেন ইয়াসিন ভুইয়ার বাড়িতে আপনারা গেলে দেখতে পাবেন ওর বাড়িতে বহুতল ও আলিশান পাকা ভবনের কাজ চলছে। তাহলে সে কিভাবে সরকারি অনুদানের ঘর পায়? এই নিয়ে ইয়াছিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই ঘর আমার না, এই ঘর আমার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার। ইয়াছিন ভূইয়ার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়িতে আরেকটিসহ মোট ২ টি সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর রয়েছে। শুক্কু মিয়ার স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন আমাদের বরাদ্দকৃত ঘর আমাদের বাড়িতে আছে, আর পাশের ঐ ঘরটি ইয়াছিন ভূঁইয়ার। ইয়াছিন ভূঁইয়া অস্বীকার করে বলেন, আমার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার বাড়িতে সরকারি ঘর আছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় পাশাপাশি দুটি ঘর। কিন্তু ইয়াছিন ভূঁইয়ার ঘরে কোন মানুষের বসবাস পাওয়া যায়নি। তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে, ঘরের ভিতরে শ্যালো মেশিন রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।

আটলা গ্রামের প্রভাবশালী ইয়াছিন ভূঁইয়ার পুকুর ইজারা, কয়েক বিঘা সম্পত্তিসহ একাধিক ব্যবসা রয়েছে বলে জানা যায়। এবং তার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়া ৪ শতক বসতভিটার মালিক হলেও মহানগর গার্মেন্টস নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউমার্কেটে রয়েছে বিশাল কাপড়ের ব্যবসা। সেও কিভাবে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর পেলো গ্রামবাসীর জনমনে প্রশ্ন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর মোতাইদ বলেন, এই প্রকল্প অনেক আগের,আমি যোগদান করেছি ২ বছর। তখন আমি ছিলাম না। তবে জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে বিত্তশালীদের ঘর দেওয়া বৈধ নয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ জানায়, এটাতো ২০১৮ সালের প্রকল্প, ঐ সময় অন্য কর্মকর্তা ছিলো, কিন্তু এই প্রকল্পের ঘর বিত্তশালীদের বরাদ্দ দেওয়ার বৈধতা নেই। দেয়া যাবেনা।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিজয়নগর উপজেলায় সাকসেস হিউম্যান রাইটস সোসাইটির আলোচনা সভা

জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে চরম অনিয়ম, ঘর পেলেন বিত্তশালী ইয়াছিন ভূঁইয়া

আপডেট টাইম : ০৫:৪৫:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী ভূঁইয়ার ছেলে ইয়াছিন ভূঁইয়া (জমি আছে ঘর নেই) প্রকল্পে ২০১৮ সালে বরাদ্দকৃত প্রকল্প থেকে বিত্তশালী হয়েও ইয়াছিন ভূঁইয়া মাছিহাতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমিনের স্বজন প্রীতিতে অসহায় গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত, জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের ঘর ইয়াছিন ভূঁইয়া সাবেক চেয়ারম্যানের ফুফাতো ভাই হওয়ার সুবাদে আল-আমিনের সহযোগিতায় সরকারি এই ঘর বাগিয়ে নেয় অঘাত সম্পত্তির মালিক আটলা গ্রামের ইয়াসিন ভূঁইয়া।

ইউনিয়নের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বহুদিন ধরে আলোচনা, সমালোচনা ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৫ ই আগস্টে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ার পর থেকেই সাধারণ জনগণের মাঝে এ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। মাছিহাতা ইউনিয়নে অনেক হতদরিদ্র পরিবার রয়েছে যাদের জায়গা থাকলেও বসবাস করার উপযোগী ঘর নেই।

সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমিনের স্বজন প্রীতিতেই অনেকেই
সরকারি এই প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়েছে যা সম্পূর্ণই চরম অনিয়ম ও অনৈতিক।

গ্রামবাসী সাংবাদিকদের কে আরও বলেন ইয়াসিন ভুইয়ার বাড়িতে আপনারা গেলে দেখতে পাবেন ওর বাড়িতে বহুতল ও আলিশান পাকা ভবনের কাজ চলছে। তাহলে সে কিভাবে সরকারি অনুদানের ঘর পায়? এই নিয়ে ইয়াছিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই ঘর আমার না, এই ঘর আমার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার। ইয়াছিন ভূইয়ার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়িতে আরেকটিসহ মোট ২ টি সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর রয়েছে। শুক্কু মিয়ার স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন আমাদের বরাদ্দকৃত ঘর আমাদের বাড়িতে আছে, আর পাশের ঐ ঘরটি ইয়াছিন ভূঁইয়ার। ইয়াছিন ভূঁইয়া অস্বীকার করে বলেন, আমার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়ার বাড়িতে সরকারি ঘর আছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় পাশাপাশি দুটি ঘর। কিন্তু ইয়াছিন ভূঁইয়ার ঘরে কোন মানুষের বসবাস পাওয়া যায়নি। তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে, ঘরের ভিতরে শ্যালো মেশিন রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।

আটলা গ্রামের প্রভাবশালী ইয়াছিন ভূঁইয়ার পুকুর ইজারা, কয়েক বিঘা সম্পত্তিসহ একাধিক ব্যবসা রয়েছে বলে জানা যায়। এবং তার খালাতো ভাই শুক্কু মিয়া ৪ শতক বসতভিটার মালিক হলেও মহানগর গার্মেন্টস নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউমার্কেটে রয়েছে বিশাল কাপড়ের ব্যবসা। সেও কিভাবে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর পেলো গ্রামবাসীর জনমনে প্রশ্ন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর মোতাইদ বলেন, এই প্রকল্প অনেক আগের,আমি যোগদান করেছি ২ বছর। তখন আমি ছিলাম না। তবে জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে বিত্তশালীদের ঘর দেওয়া বৈধ নয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ জানায়, এটাতো ২০১৮ সালের প্রকল্প, ঐ সময় অন্য কর্মকর্তা ছিলো, কিন্তু এই প্রকল্পের ঘর বিত্তশালীদের বরাদ্দ দেওয়ার বৈধতা নেই। দেয়া যাবেনা।